প্রতিদিনই বেইন স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে হাজারো মানুষ। আপনি পরিচিত মহলে অনেকের মুখে শুনে থাকবেন তার পরিবারের কেউ নয়তো আত্মীয়স্বজন কেউ ব্রেইন স্ট্রোকে মারা গেছেন। আপনি জানেন কি, কেন বাথরুমে বেশি ব্রেইন স্ট্রোক হয়।

বিভিন্ন কারণে বাথরুমে স্টোক হয়ে থাকে।তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন। এছাড়া আমাদের সচেতনও থাকা প্রয়োজন।

স্ট্রোক কি? 

মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার ফলে যে দ্রুত জটিলতার দেখা দেয় তাকে বলা হয় স্ট্রোক। স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া মানেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যাওয়া। এর ফলে বেঁচে যাওয়া রোগী পঙ্গুও হয়ে যেতে পারে। তবে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন আপনাকে স্ট্রোকের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পারে।


স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে কারন,বাথরুমে ঢুকে গোসল করার সময় আমরা প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজাই যা একদম উচিৎ নয়। এটি একটি ভুল পদ্ধতি।

এইভাবে প্রথমেই মাথায় পানি দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিক ও ধমনী একসাথে ছিঁড়ে যেতে পারে। ফলস্বরূপ ঘটে স্ট্রোক অতঃপর মাটিতে পড়ে যাওয়া।


কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোকের কারণে যে ধরনের ঝুঁকির কথা আগে ধারণা করা হতো, প্রকৃতপক্ষে এই ঝুঁকি দীর্ঘস্থায়ী এবং আরও ভয়াবহ।

বিশ্বের একাধিক গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, গোসলের সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। চিকিৎসকদের মতে, গোসল করার সময় কিছু নিয়ম মেনে গোসল করা উচিত।

সঠিক নিয়ম মেনে গোসল না করলে হতে পারে মৃত্যুও। গোসল করার সময় প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজানো একদম উচিৎ নয়। কারণ, মানুষের শরীরে রক্ত সঞ্চালন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় প্রথমেই পানি দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্ত সঞ্চালনের গতি বহু গুণ বেড়ে যায়। সেসময় বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও।

তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে মস্তিষ্কের ধমনী ছিঁড়ে যেতে পারে।
গোসলের সঠিক নিয়মঃ-

প্রথমে পায়ের পাতা ভেজাতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে উপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে। তারপর মুখে পানি দিতে হবে। সবার শেষে মাথায় পানি দেওয়া উচিত।

এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেন আছে তাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ।

আরো যে সকল কারনে স্ট্রোক হতে পারে:
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ
  • ডায়াবেটিস
  • রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল
  • অ্যালকোহল গ্রহণ
প্রতিকার :

স্টোক এড়ানোর নির্দিষ্ট কোনও ফর্মুলা নেই। তবে সেক্ষেত্রে প্রথমেই শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে হবে। প্রতিদিন ডায়েট করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার, সবজি ও ফল খেতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধাঘণ্টার বেশি সময় হাঁটতে হবে। যতটা সম্ভব ঝাল-মসলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

এছাড়াও স্ট্রোক এড়াতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়া এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ধুমপান বন্ধ করতে হবে। নিয়ম করে প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

সর্বোপরি এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো ওষুধ খাওয়া যাবে না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।