আমি বলব আপনি কোন পড়ুয়া মেয়েকেই বিয়ে করবেন । এমন মেয়েকে জীবনসঙ্গী বানাবেন, যে কাপড়ের বদলে বই কিনে টাকা শেষকরে ফেলে। 

অতিরিক্ত বই রাখতে গিয়ে পুস্তুক রাখিবার আলমারির জায়গা শেষ হয়ে যায়।

এমন মেয়েকে জীবনে চলার পথে সঙ্গী করবেন,যার কাছে সবসময়েই পড়তে চাওয়া বইয়ের তালিকা নোট করা থাকে।

শৈশব থেকেই যার শখের একটি লাইব্রেরি আছে। এমন এক মেয়েকে খুঁজে বের করবেন, যে বই পড়তে অভ্যস্ত। আপনি কীভাবে বুঝবেন, সে বই পড়তে অভ্যস্ত কি না? বলছি একটু দাঁড়ান– কি ভাবছেন? সব ভুলে ৫ মিনিট একটু মন দিয়ে পড়ুন আশা করি অনেক ভালো লাগবে।



প্রথমে লক্ষ্য করে দেখবেন তার ব্যাগে সবসময়েই একটা না একটা -পড়ার বই থাকবে। বইয়ের দোকানের তাকগুলোর ওপর দিয়ে মায়াবী দৃষ্টি দিয়ে চোখ বুলিয়ে নিয়ে যাবে। আর, পছন্দের বই দেখলে নিঃশব্দে চিৎকার করে উঠবে। পুরনো বইয়ের দোকানে একটা বই হাতে নিয়ে তার পাতা শুঁকতে দেখবেন যেই অদ্ভুদ মেয়েটাকে – ওই মেয়ে হচ্ছে পড়ুয়া। অবশ্য আমাদের সমাজে এসব পড়ুয়াদের আতেল বলা হয়। ওরা কখনোই বইয়ের পাতার গন্ধ না শুঁকে থাকতে পারে না – পাতাগুলোর রং হলদেটে হলে তো কথাই নেই। রাস্তার ধারের কফির দোকানটায় অপেক্ষা করতে করতে বই পড়বে সে। তার মগে উঁকি দিলে দেখবেন – সেখানে ক্রীম ভাসছে, কারণ এর মধ্যেই ডুবে গেছে সে বইয়ের মধ্যে। লেখকের তৈরি পৃথিবীতে হারিয়ে গেছে। সেখানে বসে পড়লে আপনার দিকে কঠিন চোখে তাকাতে পারে সে – পড়ার মাঝখানে তৃতীয় ব্যক্তির অনুপ্রবেশ মোটেও কাম্য নয় তাদের কাছে।

একটা সহজ পদ্ধতি বলে দেই, আপনাকে একটা মেয়ে কেমন তা জানতে চাইলে প্রথমে, ওই মেয়ে কোন ধরনের বই পরে সেটা জানার চেষ্টা করুন, ব্যাস আপনি পেয়ে যাবেন আপনার মনের মত একজন জীবন সাথী।

কেন আপনার মনে নেই Literature is the mirror of life তাহলে সে যে ধরনের বই পড়বে ঠিক সেই রকম তার জিবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবেন। আর পড়ুয়া মেয়েদের খুশি করা বা খুশি রাখা যাই বলেন না কেন খুবই সহজ। শুধু বিভিন্ন উপলক্ষ তৈরি করে তাকে বই উপহার দিবেন । আপনার প্রেমে হাবুডুবু খাবে। কথার মালায় গাঁথা বই উপহার দিবেন তাকে –যদি সে ইসলামিক বই প্রেমী হয় তাহলে আপনি আলী তানতাভীকে নিয়ে সত্যি সত্যি যা ভাবছেন সেটা তাকে জানাবেন। এই সময়ের সেরা লেখক ‘আরিফ আজাদ, সামসুল আরেফিন এর লেখা বইগুলো কেমন লাগে শুনবেন। আব্দুল্লাহ আজ্জামের’এর 'তাফসীরে সুরা তাওবা' সে শেষ করতে পেরেছে কি না? জিজ্ঞেস করবেন – সে মুমিনদের আম্মাজান খাদিজাতুল কুবরা (রা:) মত হতে চায় নাকি আয়শা (রা:) মত হতে চায় ?

আবুল হাসান আলী নাদাবী, মনজুর নোমানী,তাকী উছমানী ও বিলাল ফিলিপসের বই আরও আরিফ আজাদ, সামসুল আরেফিন সহ পছন্দের বই গুলো তাকে মাঝে-মাঝে উপহার দিবেন। দেখবেন সে কত্ত খুশি হয়, যা আপনাকেও খুশির জোয়ারে ভাসাবে। কথা মানেই ভালবাসা – সেটা যে আপনি বুঝেন বা জানেন তা তাকে জানাবেন। বই আর বাস্তবের পার্থক্য সেজানে – এটুকু বুঝে নিবেন।

তবে, নিশ্চিত থাকতে পারেন –নিজের জীবনকে সে একটু হলেও তার প্রিয় বইয়ের মত করে গড়ে নিতে চাইবে। যদি চায় – তাতে আপনার দোষ নেই কিন্তু আপনাকে কষ্ট করে হলেও তার পৃষ্টপোষক হতে হবে। তাকে কোন না কোনভাবে চেষ্টাটুকু তো করতে হবে। কথার বাইরেও আরো অনেক কিছু থাকে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, মূল্যবোধ, বিরোধ, সংলাপ। আপনি যদি কোন পড়ুয়া মেয়েকে খুঁজে পান, তাকে নিবিড় যত্নে আপন করে নিবেন । 
রাত দুটোয় ঘুম ভেঙে যদি দেখেন একটা বই বুকে জড়িয়ে বসে সে কাঁদছে – তাকে এক কাপ চা করে খাওয়াবেন আর বুকে জড়িয়ে ধরে রাখবেন । আপনি এমন এক মেয়েকে বিয়ে করবেন যে বই পড়তে ভালোবাসে – কারণ আপনি তারই যোগ্য এবং আপনি হয়তো সেই স্বর্গ সুখ পাওয়ার ভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন । 
আপনার জীবনটাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, অনুপ্রেরণা মনুষ্যত্ববোধ যাই বলেন না কেন সব দিয়ে রাঙিয়ে দিতে পারার যোগ্যতা রাখে সে। এমন মেয়েই পাওয়া উচিত আপনার । আপনি যদি পৃথিবী এবং এর বাহিরের অন্য সব পৃথিবীকেও পেতে চান – এমন মেয়েকে প্রিয়তমা বানাবেন যে বই পাগল। 
আরও ভাল হয় যদি, এমন মেয়েকে বিয়ে করতে পারেন যে লিখতেও ভালবাসে তাহলে তো কোন কথায় নেই। সে যদি বই পড়তে গিয়ে আপনার সেবায় মাঝে মাঝে কমতি করে বসে তাকে বকা দিবেন না। তার কাজে সহযোগিতা করবেন। কারন আপনি তাকেই চেয়েছেন। নতুন নতুন প্রকাশ পাওয়া বইগুলো তাকে এনে দেবেন।বই পড়ার জন্য তাকে সময় দিয়ে সহযোগিতা করবেন। 

যদি ঘরে ফিরে দেখেন ,বই পড়তে গিয়ে টেবিলের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে।তবে তাকে ঘুমাতে দিন, চেচামেচি করবেন না। তাঁর কাজগুলো আপনি করে দিবেন। আর যদি প্রেয়সী কুরআন - হাদিস প্রেমী হয় তবে তাকে হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসবেন। 
এ যে আপনার আল্লাহ তা`আলার কাছ থেকে পরম পাওয়া!! 
 এ যে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার অশেষ রহমত, সত্যিই আপনি ভাগ্যবান,যদি আপনার ঘরে একজন পরহেজগার, দ্বীনদার বই পড়ুয়া স্ত্রী থাকে।